জার্মান সংসদের অনুমোদনের মাধ্যমে জার্মানি ২০৪৫ সালের মধ্যে কার্বনমুক্ত হবার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা স্থির করলো৷ গ্লাসগো শহরে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনের আগে এমন সিদ্ধান্তের বাড়তি গুরুত্ব রয়েছে৷
২০২১ সালে বাসকরে কার্বনমুক্ত পরিবেশ কল্পনা করা কঠিন৷ যানবাহন, বাড়িঘর, কলকারখানা, কৃষিক্ষেত্র থেকে শুরু করে প্রায় সর্বত্র পেট্রোল, ডিজেল, কয়লার মতো জ্বালানি ব্যবহার করা হচ্ছে৷ জলবায়ুর জন্য ক্ষতিকর নয়, এমন বিকল্প জ্বালানির প্রয়োগ এখনও সীমিত রয়েছে৷ এরই মধ্যে একের পর এক দেশ নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে ‘কার্বন নিউট্রাল’ বা পুরোপুরি কার্বনমুক্ত হবার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করছে৷
জার্মানির মন্ত্রিসভার পর এবার সংসদের নিম্ন কক্ষও ২০৪৫ সালের মধ্যে দেশকে পুরোপুরি কার্বনমুক্ত করার সিদ্ধান্ত অনুমোদন করলো৷ মূল লক্ষ্যমাত্রায় পাঁচ বছর আগেই সেই অসাধ্যসাধন করতে চায় জার্মানি৷ এর আগে জার্মান সরকার এই লক্ষ্যে যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, জার্মানির সাংবিধানিক আদালত এক ঐতিহাসিক রায়ে সেই পদক্ষেপকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থের জন্য অপর্যাপ্ত হিসেবে বর্ণনা করে আরো উচ্চাকাঙ্ক্ষী লক্ষ্যমাত্রা স্থির করার নির্দেশ দিয়েছিল৷ ফলে সরকারকে বাধ্য হয়ে নতুন আইন পেশ করতে হয়৷
জার্মানির পরিবেশমন্ত্রী স্ভেনিয়া শুলৎসে ২৪ জুন ২০১২ সংসদে বিতর্কের সময় বলেন, অর্থনীতি ও গতিশীলতার ক্ষেত্রে সাফল্য বজায় রেখেই এই লক্ষ্য পূরণ করাহবে৷ পুনঃ ব্যবহারযোগ্য জ্বালানি ও অবকাঠামোর আধুনিকীকরণের মাধ্যমে ধাপে ধাপে জার্মানিকে ‘কার্বন নিউট্রাল’ করতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন৷
যথেষ্ট অগ্রগতি নিশ্চিত করতে নতুন এই আইনের আওতায় প্রতি পাঁচ বছরের জন্য সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হবে৷ ১৯৯০ সালকে মানদণ্ড হিসেবে রেখে ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমন কমপক্ষে ৬৫ শতাংশ এবং ২০৪০ সালের মধ্যে ৮৮ শতাংশ কমাতে হবে৷ তবেই ২০৪৫ সালের মধ্যে ‘কার্বন নিউট্রাল’ হওয়া সম্ভব হবে৷ জার্মানির সাধারণ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলির উপরেও পরিবেশ সংক্রান্ত কর্মসূচি স্থির করার জন্য চাপ বাড়ছে৷
আগামী নভেম্বর মাসে ব্রিটেনের গ্লাসগো শহরে জাতিসংঘের জলবায়ু সম্মেলনে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন আরো কমানোর সিদ্ধান্তের চেষ্টা চলছে৷ ২০৫০ সালের মধ্যে ‘জিরো এমিশন’ সম্ভব করতে বিভিন্ন দেশের উপর চাপ বাড়ছে৷
২০১৫ সালের প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী চলতি শতাব্দীতে তাপমাত্রার বৃদ্ধি এক দশমিক পাঁচ ডিগ্রির মধ্যে সীমিত রাখতে এমন সিদ্ধান্ত অত্যন্ত জরুরি বলে বিজ্ঞানীরা মনে করছেন৷ ক্লাইমেট অ্যাকশন ট্র্যাকার নামের সংগঠনের হিসেব অনুযায়ী, বর্তমান পরিকল্পনার আওতায় শতাব্দীর শেষে গড় তাপমাত্রা দুই দশমিক চার ডিগ্রি বেড়ে যাবার কথা৷
Germany-will-be-carbon-free-by-2045
0 মন্তব্যসমূহ