রাক্ষুসী তিস্তা নদী কখনো শান্ত, আবার কখনো সেখানে পানির হু-হু শব্দ আর শব্দ। শুকিয়ে গেলে শুধুই ধু-ধু বালুচর। যেখানে স্থায়ী গাছ-গাছালি, পশু-পাখি আর মানুষের কোনো অস্তিত্ব কখনো কল্পনাই করা যেত না। ঠিক সেখানেই চরবাসীকে স্বাবলম্বী করে তোলার স্বপ্ন নিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে ‘‘আলীবাবা থিম পার্ক”। আরব্য উপন্যাসের সহস্র রজনীর আলীবাবা ও চল্লিশ চোর গল্প অবলম্বনে রাক্ষুসে তিস্তা নদীর তীরে নির্মাণাধীন গঠনমুলক এ বিনোদন কেন্দ্রের নিমার্ণ কাজ এখন অনেকটা এগিয়ে।
আলীবাবা থিম পার্ক সুন্দরগঞ্জ পৌরসভা থেকে প্রায় ৭কিলোমিটার দূরে মীরগঞ্জ-চেতন্য-ইমামগঞ্জ বাজার হয়ে সোজা উত্তর দিকে গাইবান্ধা, রংপুর, কুড়িগ্রাম জেলার সম্মিলন স্থান তিস্তা নদীর বালুচরে ৩০একর জমির ওপর চমৎকার এক নৈসর্গিক প্রাকৃতিক পরিবেশে আলীবাবা থিম পার্কের অবস্থান।
আরব্য উপন্যাসের সেই জাদু শব্দ চিচিং ফাঁক বলে দরজা খুলে মণি-মাণিক্য না মিললেও এই আলীবাবা থিম পার্কে প্রবেশ করতেই চোখে পড়বে, মহান আল্লাহর ৯৯নাম খচিত নির্মাণাধীন ২০মিটার উঁচু ভাস্কর্য, আছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম, জেরু জালেমের পবিত্র মসজিদ আল-আকসা, পবিত্র কাবা শরীফ, হযরত ফাতেমার বাড়ি, জর্ডানের মরুভূমির সেই সাহাবীর গাছসহ বিভিন ঐতিহাসিক নিদর্শনের খোদাই চিত্র।
দর্শনার্থীদের বসার জন্য রয়েছে সিমেন্ট দিয়ে গাছের আদলে তৈরী বসার চেয়ার। দেশি-বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগিয়ে পরিপাটি করে সাজানো হয়েছে নয়না ভিরাম রাস্তা। সমুদ্রের বড় মাছের খাদ্য সংস্থান কিভাবে হয় ও আগ্নেয় গিরির গলিত লাভা এবং বড় বড় সাপ কিভাবে মানুষকে দংশন করতে পারে তা দেখানো হবে। পার্কের উত্তরে থাকছে পাহাড় এবং পানির উপর দিয়ে ট্রেন চলাচলের ব্যবস্থা, থাকবে পানির ঢেউ, সেই ঢেউয়ে মেতে উঠবে দর্শনার্থীরা। সাথে থাকবে পিকনিক স্পটও এবং রিসোর্ট সেন্টার।
স্থানীয়দের ধারণা, অশ্লীলতা মুক্ত স্বচ্ছ বিনোদন কেন্দ্র হবে আলীবাবা থিম পার্কটি। পুরো পরিকল্পনা অনুযায়ী এ পার্কের নির্মাণ কাজ শেষ হলে এটি হবে মানুষের জন্য বিশেষত্বে ভরা বিনোদনের একটি অন্যতম মজার জায়গা। তিস্তার ভরা যৌবনে পার্কটি হয়ে উঠবে আরো মনোরম। দর্শনার্থীরা পাবে নির্মল হাওয়া। নির্মাণ কাজ শেষ হলে বিশ্বের সকল পার্কের বিষয়বস্তু এখানে থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
আলীবাবা থিম পার্কের মালিক ইয়ার আলী জানান, ব্যতিক্রমধর্মী বিনোদন দিতে আমার এ উদ্যোগ। নির্মাণকাজ শেষ হলেই বুঝতে পারবেন ইন্শ আল্লাহ। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমার পার্ক চালাতে হাজার হাজার লোকের দরকার হবে। সে লোকগুলো এই এলাকারই থাকবে। কাজেই এটাকে কেন্দ্র করে বহু লোকের কর্মসংস্থান তৈরি হবে। আমি বিশ্বাস করি বেকারত্ব ঘোচাতে ব্যাপক ভুমিকা রাখবে আমার এ পার্কটি।
0 মন্তব্যসমূহ