সর্বশেষ:. . .

8/recent/ticker-posts

Header Ads Widget

Responsive Advertisement

গাদ্দাফির ছেলে সাদি গাদ্দাফি ইটালীয় ক্লাবের ফুটবলার ছিলেন

 



লিবিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট কর্নেল গাদ্দাফির ছেলে আল সাদি গাদ্দাফির সঙ্গে চুক্তি করে সারা বিশ্বকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল ইতালির প্রথম সারির ফুটবল ক্লাব পেরুজা

ধারণা করা হয় যে ব্যাপক প্রচারণা পাওয়ার জন্যই পেরুজার মালিক লুচিয়ানো গাউচি এই চুক্তিটি করেছিলেন। ইতালীয় ফুটবল লিগ সেরেয়ার একটি মাত্র খেলায় তাকে নামানো হয়েছিল, তাও বদলি খেলোয়াড় হিসেবে। তবে খেলার চেয়েও তিনি বেশি আলোচিত হয়েছিলেন মাঠের বাইরে, বিশেষ করে তার প্লেবয় লাইফ-স্টাইল এবং লাগামহীন খরচ করার স্বভাবের কারণে

২০০৩ সালের গ্রীষ্মকাল। ইতালির প্রথম সারির ফুটবল ক্লাব পেরুজা মওসুম শুরু হওয়ার আগে পেরুজায় নতুন একজন ফুটবলার নেওয়া হয়। তার নাম সাদি আল গাদ্দাফি। আধুনিক ফুটবলের ইতিহাসে তাকে দলে নেওয়া ছিল অস্বাভাবিক এক ঘটনা। কারণ তার পিতা তেল সমৃদ্ধ দেশ লিবিয়ার স্বৈরশাসক মুয়াম্মার আল গাদ্দাফি। আল সাদি পরিচিত ছিলেন শুধু সাদি নামেই। ফুটবল খেলতে ভালবাসতেন তিনি। ক্লাবে যোগ দেওয়ার অল্প কদিনের মধ্যে তিনি সব ফুটবলারের সঙ্গেই ভাল সম্পর্ক গড়ে তুলতে পেরেছিলেন। সাদি ছিল মৃদুভাষী। খুব শান্ত এবং উদার প্রকৃতির মানুষ।"

সাদি আল গাদ্দাফি খুব একটা ভাল ফুটবলার ছিলেন না। তবে নিজেকে উন্নত করার জন্য তিনি কঠোর পরিশ্রম করছিলেন

সাদিকে নিয়ে খেলার মাঠে যতটা না আলোচনা ছিল, তার চেয়েও বেশি আলোচনা ছিল মাঠের বাইরে তার কর্মকাণ্ডের জন্য। আর সেটা ছিল তার বিলাস বহুল জীবন যাপনের কারণে

"তার একটা ব্যক্তিগত জেট ছিল। সাদি প্রচুর খরচ করতো। তার সঙ্গে থাকতো একজন সুটকেস-ধারী ব্যক্তি যাতে প্রচুর নগদ অর্থ থাকতো।"

আল সাদি কিন্তু তখনও পেরুজার হয়ে কোনো ম্যাচে খেলার সুযোগ পাননি। কিন্তু ২০০৪ সালে পেরুজা যখন ইউভেন্টাসের মুখোমুখি হলো তখন তার জীবনে এলো বড় পরিবর্তন। পেরুজা এক-শূন্য গোলে এগিয়ে গেল তার পর ইউভেন্টাসের একজন খেলোয়াড়কে লাল কার্ড দেখিয়ে বের করে দেওয়া হলো মাঠের বাইরে। আহত হলেন জে বথরয়েড। তখন সাদিকে মাঠে নামানোর দারুণ সুযোগ পেয়ে গেলেন পেরুজার ম্যানেজার। শেষ পর্যন্ত ওই ম্যাচে তারা জয়ী হলো। এটাই ছিল পেরুজার হয়ে সাদির একমাত্র ম্যাচ। তবে ক্লাবের অন্যান্য খেলোয়াড়ের জন্য ছিল একটা বোনাসের মতো

জে বথরয়েড বলেন, "কারো যখন খেলায় অভিষেক হয় তখন সে সবাইকে খাওয়াতে নিয়ে যায়। সাদির অভিষেক হওয়ার পর সে সবাইকে মার্সিডিজ গাড়ি কিনে দিতে চাইল।"

সাদির পেশাদার ফুটবলার হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হয়নি। কিন্তু তিনি ইতালির আরো কিছু ক্লাবেও গিয়েছিলেন। কিন্তু খেলতে পেরেছিলেন আরো একটি ম্যাচ। তার পর ২০০৭ সালে তিনি লিবিয়াতে ফিরে যান। ২০১১ সালে গাদ্দাফির পরিবারের ভাগ্য বদলে যেতে শুরু করে। আরব দেশগুলোতে আরব বসন্ত নামে যে আন্দোলন শুরু হয় তাতে গৃহযুদ্ধ বেঁধে যায় লিবিয়াতে এবং গাদ্দাফি সরকারের পতন ঘটে এবং গাদ্দাফি নিহত হন।

লিবিয়া থেকে পালিয়ে যান সাদি। কিন্তু ২০১৪ সালে তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয় এবং এর পর থেকে তিনি সেখানেই আটক রয়েছেন। তিনি যে একসময় পেরুজার শার্ট পরে ফুটবল খেলেছেন অনেকের কাছেই এখন তা এক অবিশ্বাস্য ঘটনা

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ